তুলার বাজারে অস্থিতিশীলতা বাড়তে পারে সুতার দাম, অনেক কেনাকাটা থাকলেও নানা সমস্যা পিছু
ছাড়ছে না দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের। চীনে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে টেক্সটাইল
মিলগুলো পূর্ণ ক্ষমতায় উৎপাদন করতে পারছে না। ওভেন কারখানার অধিকাংশই সময়মতো কাঁচামাল
পেয়ে চিন্তিত।এদিকে বিশ্ববাজারে আবার তুলার দাম বাড়ছে। ফলে সুতার দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনটা হলে
বিপাকে পড়তে পারেন নিট পোশাক কারখানার মালিকরা।টেক্সটাইল মিল মালিকদের সংগঠন
বিটিএমএর নেতারা সুতার দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা বলছেন, তুলার মূল্য সূচক গত এক দশক ধরে
বিশ্ববাজারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। যদি এটি পুরো মাস ধরে চলতে থাকে, তবে ডিসেম্বরে সুতার দাম ১৫
শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। অতএব, পোশাক শিল্পের মালিকদের নতুন অর্ডার নেওয়ার সময়
বিদেশী ক্রেতাদের সাথে দর কষাকষিতে সতর্ক থাকতে হবে।
আরও নতুন নিউস পেতে আমাদের সাইট:amarjobs.xyz
তুলার বাজারে অস্থিতিশীলতা বাড়তে পারে সুতার দাম
মঙ্গলবার রাজধানীর পান্থপথে বিটিএমএ ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, সুতার দামের ওপর স্থানীয় স্পিনারদের তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই। কারণ, তুলা একটি আন্তর্জাতিক পণ্য। গত আগস্টে বিশ্বব্যাপী তুলার দাম ছিল ১০০ পয়েন্টের নিচে। গত মাসের শেষে তা ছুঁয়েছে ১০০ পয়েন্ট। চলতি মাসে তা আরও বেড়েছে। আজ (গতকাল) তুলার মূল্য সূচক ১০৫ পয়েন্ট, যা গত শুক্রবার ১০৮ পয়েন্ট ছিল।বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ক্রয়াদেশ দেওয়ার পর আফ্রিকা থেকে বাংলাদেশে তুলা আনতে এক মাস সময় লাগে। আমেরিকান তুলা আনতে দুই মাস সময় লাগে। ফলে চলতি মাসে তুলার মূল্য সূচক বাড়তে থাকলে ডিসেম্বরে সুতার দাম বাড়াতে হবে।গত সেপ্টেম্বরে হঠাৎ করেই সুতার দাম বেড়ে যাওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়েন পোশাক ও বস্ত্র খাতের মালিকরা।
এরপর শীর্ষ ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসেন
বিটিএমএ, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিটিএলএমইএর নেতারা। ২১ আগস্ট দ্বিতীয় বৈঠকে, তিনটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। একই সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে পোশাক শিল্পে প্রতি কেজি ব্যবহৃত ৩০ টি কার্ডড সুতার সর্বোচ্চ মূল্য ৪ ডলার ২০ সেন্ট হবে। যাইহোক, সভায় এটাও বলা হয়েছিল যে বিশ্ব বাজারে তুলার মূল্য সূচক ১০০ পয়েন্ট অতিক্রম করলে দাম আবার বৃদ্ধি পাবে এবং যদি সূচকটি ৬৫ পয়েন্ট বা তারও কম হয়, তাহলে সুতার দাম কমবে। তা ছাড়া, (প্রফর্মা চালান বা বিক্রেতা টেক্সটাইল মিলের অফিসিয়াল মূল্য) এর বৈধতা ৭ দিন থেকে ১৫ দিনে পরিবর্তিত হয়।জানতে চাইলে নিটওয়্যার মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিশ্ববাজারে তুলার মূল্য সূচক বাড়ছে।এভাবে চলতে থাকলে এবং দুই-তিন মাস পর সুতার দাম বাড়লে আপত্তি নেই। কারণ, আজকে তুলা অর্ডার করলে দেশে আসতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগবে।
সমস্যা হল কিছু স্পিনিং মিল ইতোমধ্যে ৮০
টি কার্ডেড সুতার দাম ৪০ সেন্টে দাবি করতে শুরু করেছে কারণ বিশ্ববাজারে তুলার দাম কিছুটা বেশি। যদি সুতার দাম হঠাৎ বেড়ে যায়, তাহলে সমস্ত নেট গার্মেন্ট মালিকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।এরই মধ্যে বাড়তি কেনাকাটার সুবিধা পেতে শুরু করেছেন পোশাক শিল্পের মালিকরা। গত সেপ্টেম্বরে ২৩৪২ কোটি টাকা বা ২৯,০৬০ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১.৬ শতাংশ বেশি। দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ পোশাক রপ্তানির রেকর্ড এটি।এদিকে, বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, “গত আগস্ট থেকে আগামী জানুয়ারিতে তুলার দাম বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে।” সেই উদ্বেগের কথা গতকাল (সোমবার) বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সভাপতিকে জানিয়েছি। এখন ক্রয় অর্ডার দিয়ে নভেম্বরের মধ্যে সুতা সরবরাহ করলে দাম বাড়বে না। তবে তুলার মূল্য সূচক বাড়লে ডিসেম্বরে তুলার দাম বাড়বে।
Post a Comment